গোলে শোরগোলে শৈশবে হারাই
“ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ যদি একটা দেশ হত তবে ফুটবল হত তার জাতীয় খেলা” – এমন একটা প্রবাদ প্রচলিত আছে আমাদের মাঝে। রেমিয়ানদের শৈশব কৈশোরের বিকেলগুলোর সাথে জড়িয়ে আছে বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলার স্মৃতি। কত স্মৃতি! হাউজ টিমের ম্যাচ, টান টান উত্তেজনা! কোন হাউজ চ্যাম্পিয়ন হবে? এগুলোই ছিলো আমাদের বেড়ে ওঠার সময়কার কিছু রোমাঞ্চকর মুহূর্ত। আমার অবশ্য ব্যক্তিগত ভয়াবহ স্মৃতি আছে আন্তঃহাউজ ফুটবল প্রতিযোগিতা নিয়ে। একবার নিজের গোল পোস্টেই বল ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম। আত্মঘাতী গোলের সেই স্মৃতি তারপর অনেক দিন বহন করতে হয়েছে। রেমিয়ানদের কাছে তাই ফুটবল মানেই কৈশোরের দিনগুলোতে ফিরে যাওয়া।
কৈশোরের সেই দিনগুলোতে ফিরে যাওয়ার প্রত্যাশা নিয়েই বিগত ৩ বছর থেকে প্রাক্তন রেমিয়ান দের সংগঠন ওল্ড রেমিয়ান্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন “ORWA 5-A Side Football Fest” এর আয়োজন করে যাচ্ছে। গত ৬ অক্টোবর ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ প্রাঙ্গণে বসেছিলো এর তৃতীয় আসর। এবারের আসরে মোট ২৫ টি ব্যাচ অংশগ্রহণ করেছিলো। এদের মধ্যে সবচেয়ে সিনিয়র ব্যাচ ছিলো ১৯৮৪ ব্যাচ।টিম গুলোকে কিশলয়, পল্লব ও শতদল এই তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হয়।
কিশলয় গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ২০১১ ব্যাচ ও রানার আপ হয়েছে ২০১০ ব্যাচ।
পল্লব গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ১৯৯৮ ব্যাচ ও রানার আপ হয়েছে ১৯৯৭ ব্যাচ।
শতদল গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ১৯৯৩ ব্যাচ এবং রানার আপ ১৯৯২ ব্যাচ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওল্ড রেমিয়ান্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন এর সভাপতি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এবং ওল্ড রেমিয়ান্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান। সেই সাথে আরো অনেক প্রাক্তন রেমিয়ান ও শিক্ষক মন্ডলী ও উপস্থিত ছিলেন।
রেমিয়ানদের মিলনমেলা বসেছিলো সেদিন ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ প্রাঙ্গণে। অগ্রজ অনুজ সবাই একসাথে মেতে উঠেছিলো ফুটবল খেলায়। প্রাক্তন রেমিয়ান দের অনেকেই তাদের পরিবার, ছেলে মেয়ে সবাইকে নিয়ে এসেছিলেন। কেউ কেউ হাউজের বারান্দায় হাঁটছিলেন আর তার ছেলে বা মেয়েকে বলছিলেন- “এই হাউজেই আমি থাকতাম ওই রুমটাই।” সন্তানের সামনে আরো নানা স্মৃতিচারণ করছিলেন সবাই। এত বছর আগে চলে গেলেও যেন এখনো তাদের মনে হচ্ছিলো, সেই তো সেদিনের কথা! ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের সাথে তারা এক সূত্রে বাঁধা পড়ে গিয়েছেন। এ বন্ধন ছিড়বার নয়। তাই পৃথিবীর যে প্রান্তেই একজন রেমিয়ান থাকুক না কেন কারণে অকারণে তার ছুটে যেতে মন চায় সেই ৫২ একরের স্বর্গে।
ক্যামেরাবন্ধী স্মরণীয় মুহূর্ত-
সহযোগিতায়-
নূর-এ-সাফী আহনাফ
কলেজ নং- ৯৮৩২
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
রেমিয়ান, এসএসসি ২০১৩ ব্যাচ।